বিদেশে প্রথম চীনা সামরিক ঘাঁটি

চীনের ঝানজিয়াংয়ের সামরিক বন্দর থেকে সমুদ্রযাত্রার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার সময় জাহাজে দাঁড়িয়ে আছেন চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) সেনারা। গত মঙ্গলবারের ছবি l রয়টার্স
উত্তর-পূর্ব আফ্রিকার দেশ জিবুতির উদ্দেশে চীনের কয়েকটি সামরিক জাহাজ রওনা হয়েছে। দেশের বাইরে প্রথম সামরিক ঘাঁটি স্থাপন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ওই জাহাজগুলো রওনা হয়।

বেইজিংয়ের ভাষ্য, আফ্রিকা পশ্চিম এশিয়ায় শান্তিরক্ষা মানবিক সাহায্য প্রদানে চীনের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে এই ঘাঁটি। অঞ্চলের সামরিক সহযোগিতা, নৌবাহিনী এবং উদ্ধার অভিযানেও অংশ নেবে চীনের সেনারা।

জিবুতির অবস্থানগত কারণে সেখানে চীনের নৌঘাঁটি গড়া জাহাজ পাঠানোর খবরে উদ্বিগ্ন হয়েছে ভারত। উল্লেখ্য, জিবুতির অবস্থান ভারত মহাসাগরের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে। নয়াদিল্লি মনে করে, বাংলাদেশ, মিয়ানমার শ্রীলঙ্কাকে সঙ্গে নিয়ে চীনের সামরিক বাণিজ্যিক স্থাপনা গড়ে তোলার যেস্ট্রিং অব পার্লসবা মুক্তোর মালা নামে পরিচিত পরিকল্পনা আছে, জিবুতি হবে চীনের নতুন আরেকস্ট্রিং অব পার্লস

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার খবরে বলা হয়, চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় গাংডং প্রদেশের বন্দর ঝানজিয়াং থেকে জিবুতির উদ্দেশে রওনা হয়েছে জাহাজগুলো। নৌবাহিনীর কমান্ডার শেন জিনলং জিবুতিতে ঘাঁটি নির্মাণ করার একটি আদেশ পাঠ করেন। তবে কতগুলো জাহাজ জিবুতির উদ্দেশে যাচ্ছে এবং কবে থেকে ওই ঘাঁটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হবে, তা বলা হয়নি সিনহুয়ার প্রতিবেদনে। দুই দেশের মধ্যেবন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনারপর এই ঘাঁটি নির্মাণের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। গত বছর এই ঘাঁটি তৈরির কাজ শুরু হয়।

গতকাল বুধবার দেশটির সরকারনিয়ন্ত্রিত পত্রিকা গ্লোবাল টাইমস-এর সম্পাদকীয়তে বলা হয়, ‘চীনের নিরাপত্তা রক্ষার উদ্দেশ্যেই দেশের সামরিক উন্নয়ন অপরিহার্য। এটা বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণ করার উদ্দেশ্যে নয়।জিবুতিতে অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ফ্রান্সের সামরিক ঘাঁটি রয়েছে।

সম্প্রতি আফ্রিকায় বিনিয়োগ বৃদ্ধি দ্রুত সামরিক ব্যবস্থার আধুনিকায়নে কাজ করছে চীন। ২০১৫ সালে আফ্রিকার দেশগুলোর এক সম্মেলনে আফ্রিকার উন্নয়নে ছয় হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দেয় চীন।

চীনের প্রথম বৈদেশিক নৌঘাঁটি স্থাপনে জিবুতিকে বেছে নেওয়ার কারণ হলো কৌশলগতভাবে দেশটির অবস্থান। এটি লোহিত সাগর হয়ে সুয়েজ খালে প্রবেশদ্বারের কাছেই। এবারই প্রথমবারের মতো সেখানে চীনের সেনাবাহিনীর সদস্যরা যাচ্ছেন।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জেং শুয়াং সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, এই ঘাঁটির মধ্য দিয়ে আফ্রিকা বিশ্বে শান্তি আনতেনতুন বড় অবদানরাখতে পারবে চীন। আর জিবুতির অর্থনৈতিক উন্নয়নেও তা ইতিবাচক অবদান রাখবে।
Previous
Next Post »